OrdinaryITPostAd

করলা বা তিতা খাওয়ার যত উপকারিতা

করলা বা তেতো খাওয়ার যত উপকারিতা 

৩১ শে মার্চ শুক্রবার ২০২৩




নিম পাতা, উচ্ছে, কালমেঘ, করলা ইত্যাদি নামগুলো শুনেই সাধারণত পালাই আমরা। তেঁতো খেতে আমাদের কারোরই একেবারেই ভালো লাগে না। তবু রোজ বাবা-মায়েরা জোর করে তেঁতো খাওয়ান আর বলেন এতে নাকি শরীর ভালো থাকবে। জোর করে সেগুলো হয়তো খেয়ে নেয় কেউ, আবার কেউ হয়তো বা খানই না। কিন্তু আমাদের রোজ তেঁতো খাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এতে আমাদের শরীরের কোন কোন উপকার হয়, চলুন জেনে নেয়া যাক -

তেঁতো সব্জির গুনাগুণ

১) ১)১) তেঁতো সব্জিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, সি এবং কে থাকে। এছাড়াও এতে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তেঁতো সব্জিতে ফাইবারও প্রচুর পরিমানে থাকে। এতে ফ্যাট এবং সোডিয়ামের পরিমান খুব কম থাকে। তেঁতো সব্জি আমাদের ত্বকের পক্ষে খুবই উপকারী। ত্বককে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। নার্ভাস সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে, চোখ ভালো রাখতে এবং রক্ত যাতে জমাট না বাঁধে তা কার্যকরী করে তেঁতো সব্জি।

২) তেঁতো সব্জি আমাদের হজম শক্তি বাড়ায়। যে কোনও ধরনের খাবারই হজম করতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আমাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে, রক্ত পরিশুদ্ধ থাকে, কোলেস্টেরল আয়ত্বে থাকে, লিভার সুস্থ থাকে এবং শরীরে ফ্যাট জমতে দেয় না। এই কারণে ডায়েটে তেঁতো সব্জি থাকা খুব জরুরি।

৩) আমাদের জিভে বিভিন্ন স্বাদ গ্রহণের জন্য স্বাদকোরক থাকে। সেই সমস্ত স্বাদকোরকের জন্য আমরা মিষ্টি, নোনতা, তেঁতো, ঝাল, টক প্রভৃতি স্বাদ পাই। কিন্তু এই সমস্ত স্বাদকোরককে সঠিকভাবে স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা যোগায় তেঁতো খাবার। তেঁতো খেলে আমাদের খিদেও বাড়ে। আর ওজন কমানোর জন্য তেঁতো সব্জি খুবই উপকারী।

৪) লিভার পরিস্কার রাখে। লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। টাইপ টু ডায়াবিটিসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। সুগার বা মধুমেহ রোগ প্রতিরোধ করে।

করলার উপকারিতা

 করলা নামটি শুনলেই এক প্রকার তেতো জাতীয় সবজি চোখে ভেসে ওঠে। হয়তো তেঁতো বলেই অনেকেই সবজিটিকে এড়িয়ে চলে। তবে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ করলা খুব উপকারী প্রত্যেকের জন্য। উচ্ছে বা করলায় আছে ভিটামিন, ফোলেট, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, বিটাক্যারোটিন, ফাইবার, আয়রন, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান। উচ্ছে বা করলা সেদ্ধ শরীরের জন্য বেশ উপকারী। চলুন জেনে নেই করলার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কেঃ

হজমে সহায়তা পেতেঃ করলা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। এতে করে খাবার হজম ভালো হয় পাশাপাশি পেটও পরিষ্কার থাকে। সেই সাথে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়। এই সবজিটিতে যে পরিমান ভিটামিন সি রয়েছে তা শরীর সুস্থ রাখতে অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যঃ করলা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। উচ্ছেতে আছে প্রাকৃতিক ইনসুলিন। ফলে এটি ইউরিন ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। করলার জুস সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক উপকারী। এছাড়া করলার রস ক্যানসার কোষ ধ্বংস করে এবং নতুন কোষ তৈরি হতে দেয় না।

দেহের ওজন কমানোঃ যাদের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় রয়েছে তারা এখন থেকেই করলার রস খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। যদি খাবার ঠিকমতো হজম হতে থাকে, তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমার সুযোগ পায় না, তাই দেহের ওজন হ্রাস পেতে শুরু করে। করলার রস নিয়মিত খেলে অল্প দিনেই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

পাইলস সারাতেঃ যাদের পাইলসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়ম করে প্রতিদিন সকাল করলার রস খেতে পারেন যা আপনাকে খুব অল্পদিনের মধ্যেই পাইলসের যন্ত্রণা থেকে রেহাই দেবে। এছাড়া করলা গাছের মূল বেটে নিয়ে সেই পেস্ট পাইলসের উপর লাগালেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।

শক্তিবর্ধকঃ করলার রস শক্তিবর্ধক হিসেবেও কাজ করে। এটি স্ট্যামিনা বাড়ানোর জন দারুণ কার্যকরী। পাশাপাশি ভালো ঘুমেও সহায়তা করে। এই সবজিতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শ্বাসরোগ দূর করেঃ করলার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ফুসফুস ভালো থাকে। এই রস অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও গলার প্রদাহে উপকার করে। সবুজ এই সবজীটি ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ, যা ত্বককে ভালো রাখে। এছাড়া ব্রণ সারাতেও দারুণ কাজ করে করলা।

রক্ত বিশুদ্ধকরণঃ বিভিন্ন কারণে রক্ত দূষিত হয়। তার থেকে চুলকানি-সহ নানান সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যার সমাধানে উচ্ছে খুবই ভালো। রক্ত পরিশ্রুত করে এটি। উচ্ছের রসের সঙ্গে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া ভালো।

রোগ প্রতিরোধঃ করলার উপাদানগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়।

ম্যালেরিয়ায় করলাঃ ম্যালেরিয়ায় খুবই ভালো। এ ক্ষেত্রে করলা পাতার রস খেলেও উপকার হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ম্যালেরিয়ার রোগী দিনে তিনখানা করলা পাতা ও তিনটি গোলমরিচ থেঁতো করে ৭ দিন খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।

জ্বরেঃ করলা পাতার রস খেলে জ্বর সেরে যায়। জ্বরের পরে মুখের অরুচি দূর হয়।




কৃমির সমস্যায় করলাঃ ছোটো বড়ো অনেকেই কৃমির সমস্যায় ভোগেন। সে ক্ষেত্রে করলা বা উচ্ছে খেলে মলের সঙ্গে শরীর থেকে কৃমি বেরিয়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাক রুখতেঃ বিশেষজ্ঞরা বলেন, করলা রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড বা খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থেকে। ফলে রক্তনালিতে চর্বি জমতে পারে না তাই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমায়।

লিভার ভালো রাখেঃ উচ্ছের রস লিভার পরিষ্কার করার কাজও করে। উচ্ছের রস পান করলে লিভারের যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বাতের ব্যথায় উপকারি করলাঃ চার চা-চামচ করলা বা উচ্ছেপাতার রস একটু গরম করে দেড় চা চামচ বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেলে বাতের ব্যথা দূর হয়।

অরুচি দূর করেঃ খাবারে অরুচি হলে এক চা-চামচ করে করলা বা উচ্ছের রস সকাল ও বিকালে খেলে খাবারে অরুচি দূর হবে।

প্রস্রাব পরিষ্কার হয় করলায়ঃ বিশেষজ্ঞরা বলেন, উচ্ছেপাতার রস ৫ থেকে ১০ চা-চামচ নিয়ে তাতে একটু হিং মিশিয়ে খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়।

চোখের জন্য উপকারীঃ উচ্ছের বিটাক্যারোটিন চোখের যে কোনো সমস্যা সমাধান করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উচ্ছে।

বমি বন্ধে করলাঃ ছোটোদের বমি করার অভ্যাস থাকে। কয়েকটি উচ্ছের বিচি ও তিনটি গোলমরিচ সামান্য জল দিয়ে বেঁটে কয়েক দিন খাওয়ালে বমি বন্ধ হয়।


পাইলস সারাতে করলাঃ এক গ্লাস দুধে উচ্ছেপাতার রস তিন চা-চামচ মিশিয়ে খালি পেটে এক মাস খেলে উপকার হয়।

ক্যানসার প্রতিরোধে করলাঃ উচ্ছে রসের মধ্যে থাকা এনজাইম রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। ফলে ক্যানসারের আশঙ্কা খানিকটা কমে।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪