OrdinaryITPostAd

ইফতারিতে ভাজাপোড়ার অপকারিতা

 ইফতারিতে ভাজাপোড়ার              অপকারিতা 

২৯ শে মার্চ  ২০২৪  শুক্রবার 





     ছবি  সংগ্রহীত 





 রমজান মাস হলো রহমতপূর্ণ একটি মাস। এ মাসে আমরা সারাদিন রোজা রাখার পর  ইফতার  খুলি। এ  ইফতারিতে আমাদের  প্রোটিনসম্মত খাবারের পাশাপাশি  তেলে ভাজা  সম্মতও কিছু মুখরচক জিনিস  থাকে। এগুলো আমাদের স্বাথ্যের জন্য খুবই  ক্ষতিকর।



এই ভাজা-পোড়ার মধ্যে রয়েছে  বেগুনি,  আলুর চপ, ধনিয়াপাতার চপ, পিয়াজু ইত্যাদি। ভাজা-পোড়া খেলে পেটের খিদে মিটলেও গলা ও বুকজ্বালাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক-আলসারের সমস্যা নেই, তারাও বলেন ইফতারের পর শরীর ছেড়ে দেয়, গায়ে জোর পাওয়া যায় না ইত্যাদি। এ সব কিছুর মূল কারণ ইফতারে অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার গ্রহণ।



যারা সবসময় সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকতে চান, তাদের জন্য সমাধান হচ্ছে ইফতারে পরিমাণ মতো খাওয়া। মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, কাবাব, চপ ইত্যাদির পরিবর্তে ইফতারে বেছে নিতে হবে তাজা ফল, সবজি, সবজির সালাদ বা ফলের রস।



বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী বলেন, সারা দিনের রোজার শেষে ভাজা-পোড়ায় পেট ভরলেও শরীরের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তাই ইফতারে তেলে ভাজা খাবারের চেয়ে সবুজ আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরের জন্য উপকারি এবং সকলের এ সব খাবার দিয়েই ইফতার করা উচিত।



সালাউদ্দিন নামের একজন জানান, চপ আর বেগুনী কিনতে এসেছে তিনি। ইফতারে ভাজা পোড়া থাকাটা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ইফতারের আগমুহূর্তে টেবিলে ভাজা পোড়া খাবার সাজানো থাকে তা দেখে লোভ সামলানো দায় হয়ে পরে।



রোজা শুরু হলে ছোট-বড় হোটেল ও রেস্তোরাঁর পাশাপাশি রাস্তার ওপরও ইফতার সামগ্রীর অনেক অস্থায়ী দোকান বসে। সেখানে নানা ধরনের মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়, যার বেশিরভাগই তেলে ভাজা।



সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মাংস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন রকমের খাবার। মুরগির রোস্ট, সুতি কাবাব, খাশির রেজালা, কোয়েল পাখির রোস্ট, এসব তো আছেই। সেই সাথে রয়েছে ফুচকা, দইবড়া, পেঁয়াজু, বেগুনি, পাকোড়া, পরোটাসহ নানা পদের খাবার। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও রোজাদারদের পছন্দের তালিকায় সব সময়ই থাকে।



প্রতিটি পাড়া, মহল্লা ও বড় বড় সড়কের পাশের দোকান থেকে শুরু করে অভিজাত হোটেলগুলোতে এসব ইফতার সামগ্রী মেলে। সারাদিন রোজা রাখার পর এই ধরনের তেলে ভাজা ভারী খাবার আর ভুরিভোজন আসলে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী? এমন প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বললেন,  তেলে ভাজা এসব খাবারে গ্যাসট্রিক, ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের অসুস্থতার শঙ্কা রয়েছে।


এসব খাবার পরিহার করে পুষ্টিকর খাবার ও সাথে বেশি করে দেশি ফল খাওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।



চিকিৎসকদের মতে, সারাদিন রোজা রেখে অস্বাস্থ্যকর তেলেভাজা ইফতারি হৃদরোগ-স্ট্রোকসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। একই তেল দিনের পর দিন ব্যবহার করে তৈরি খাবার নিয়মিত গ্রহণে ফ্যাটিলিভার থেকে শুরু করে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই রোজার মাসে ইফতারিতে এসব খাবার পরিহার করে ফলমূলজাতীয় সুষম খাবার খেতে হবে।



সারাদিন রোজা রাখার পর এই ভাজাপোড়া খাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডায়েটিশিয়ান সিরাজাম মুনিরা জাগো নিউজকে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই ইফতারির জন্য বাইরের ভাজাপোড়া খাবার তৈরিতে একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয়। তেলের মান নির্ভর করে স্মোক পয়েন্ট অর্থাৎ, তেল কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফোটানো হয় তার ওপর। অতিরিক্ত তাপে ভাজা হলে স্মোক পয়েন্ট বেশি হয়। তখন সেটি র্যানসিড তথা হাইড্রোজেনেটড অয়েলে পরিণিত হয়ে তেলের স্বাভাবিক গঠন ভেঙে যায়। যার আরেক নাম ট্রান্সফ্যাট।



ট্রান্সফ্যাটের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে ছোলা, বেগুনি, আলুর চপ, পিঁয়াজুসহ ভাজাপোড়া খাবারে প্রোটিনসহ নানা উপাদান থাকলেও অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটে বারবার ভাজা হলে সেটি গ্রহণে ফ্যাটি লিভার, ক্যানসার, টাইপ-২ ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।




তিনি আরও বলেন, সয়াবিন, সরিষা, অলিভ অয়েলসহ সব তেলেই আলাদা স্মোক পয়েন্ট থাকে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভাজাপোড়ার ক্ষেত্রে ডিপ ফ্রাইড তথা ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা অতিরিক্ত তাপামাত্রায় ভাজাপোড়া খাবার তৈরি করা হয়। ডিপ ফ্রাইয়িংয়ে সাধারণত ২৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরা হয়। 



কিন্তু চিকেন ফ্রাইসহ বিভিন্ন ভাজাপোড়ায় তাপমাত্রা ৬শ ডিগ্রি পর্যন্ত পেরিয়ে যায়। যে তেল দিয়ে কোনো কিছু পুনরায় ভাজা ঠিক নয়। এছাড়া একই তেল দ্বিতীয়বার ব্যবহারের আগে স্মোক পয়েন্টে যাওয়ার পর সেটিকে ভালোভাবে ছেঁকে পোড়া অংশ ফেলে দিতে হবে। বাকি তেল রান্নায় ব্যবহার করা যাবে। তবে কোনোভাবেই তিনবারের বেশি হওয়া যাবে না।



ডাক্তারের পরামর্শ দিয়েছেন   যে ভাজাপোড়া খেতে হবে  পরিমাণমতো। এটা অধিক পরিমাণে  খাওয়া যাবে না। ডাক্তারেরা বলেন আমাদের  কাছে অনেক রোগী আসে গ্যাস্ট্রিক  এর সমস্যা নিয়ে। তারা অধিক পরিমাণে  ভাজাপোড়া  সম্মৃদ্ধ  খাবার  খায়। অনেকে এ সমস্যার জন্য মারাও গেছে।



পরিশেষে বলা যায় আমাদের  ভাজাপোড়া নিয়মমাফিক  খেতে হবে। মুখের লোভ এই ভাজাপোড়া  থেকে কমাতে হবে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪