OrdinaryITPostAd

রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

 রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

১লা এপ্রিল শনিবার ২০২৩

   

মুসলিম উম্মার জীবনে রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। পবিত্র কুরআন এবং হাদীস শরীফে এর বিশেষ বিবরণ ও তাৎপর্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

❑ মহান আল্লাহ তাআলার বাণী- “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মত তোমাদের উপরও রোযা ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার।” (সুরা বাকারা-১৮৩)

❑ রাসুল (সাঃ) বলেছেন,যে ব্যাক্তি রমজান মাস পেল অথচ নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারলো না, সেই ব্যাক্তি ধ্বংস হোক।
❑ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেনঃ বিনা ওযরে রামাযানের সিয়াম ত্যাগকারী কাফির। [আবূ ইয়ালা, দায়লামী,ফিকহুস সুন্নাহ]

❑ যে ব্যক্তি শরীয়তের ওযর ছাড়া এ মাসের একটি রোযাও ছেড়ে দিবে সে যদি সারা বছর সিয়াম পালন করে তবুও তার পাপের খেসারত হবে না।[বুখারি শরীফ]

❑ আবূ হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুল (সঃ) ইশরাদ করেছেন, (গুনাহ হতে বাঁচার জন্য) রোযা ঢাল স্বরূপ। সুতরাং রোযাদার অশ্লীল কথা বলবে না বা জাহেলী আচরণ করবে না। কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত হলে অথবা গালমন্দ করলে সে তাকে দুই বার বলবে, আমি রোযাদার। তিনি আরো বলেন, যার হাতে আমার জীবন সেই সত্তার শপথ! রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ মহান আল্লাহর নিকট কস্তুরীর সুগন্ধ হতেও অতি উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেন, রোযাদার খাদ্য ,পানীয়,ও কামভাব পরিত্যাগ করে আমার উদ্দেশেই রোযা রাখে। সুতরাং আমি তাকে বিশেষভাবে রোযার পুরস্কার দান করবো। আর নেক কাজের পুরস্কার দশ গুণ পর্যন্ত দেয়া হবে। (ছহীহ বোখারী,প্রথম খন্ড,পৃষ্টা ৩৩৩)
যে ঈমান ও বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের আশায় রমজানের রোযা রাখে।


❑ হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন, যে ঈমান ও বিশ্বাস সহকারে সওয়াবের আশায় শবে কদরে নামায পড়ে এবং রমজানের রোযা রাখবে,তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বোখারী,১/৩৩৪)
ঈদের দু’টি মাসই ঊনত্রিশ দিন হয় না।


❑ হাদীস : আবু বাকরা (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে রেওয়ায়াত করেন,নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন,এমন দু’টি মাস আছে যার উভয়টি (পর পর) ঘাটতি অর্থাৎ ঊনত্রিশ দিন হয় না।আর তা হল ঈদের দু’টি মাস রমজান এবং যিলহজ্ব। (বোখারী,১/৩৩৪)
রমজানের একদিন বা দু’দিন পূর্বে রোযা রাখা যাবে না।


❑ হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) ইশরাদ করেছেন, তোমাদের কেউ রমজানের একদিন বা দু’দিন পূর্বে নফল রোযা রাখা যাবে না। তবে কেউ যদি প্রতিমাসে এ রোযা রাখতে অভ্যস্ত ,তাহলে রাখতে পার। (বোখারী,১/৩৩৪)
সেহরী ও ফজরের নামাজের মাঝখানে সময়ের ব্যবধান।

❑ হাদীস: যায়েদ বিন সাবেত (রা বলের, আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সা এর সাথে সেহরী খেয়েছি। তার পর নামায পড়তে দাড়িঁয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যায়দ ইবনে সাবেত (রাঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম,সেহরী ও আযানের মাঝখানে কত সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন,পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার মত সময়ের ব্যবধান ছিল। (বোখারী,১/৩৩৫)
সেহরী খাওয়ার কল্যাণ বরকত লাভ হয়।

❑ হাদীস : হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) বলেছেন, তোমরা সেহরী খাও। কেননা সেহরী খাওয়ায় বরকত লাভ হয়। (বোখারী,১/৩৩৫)
রোযাদার ভূলবশতঃ পানাহার করলে,তার হুকুম।

❑ হাদীস ; আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সঃ) বলেছেন, রোযাদার যদি ভুল করে কিছু খায় বা পান করে, তা হলে সে (ইফতার না করে) রোযা পূর্ণ করবে।কেননা আল্লাহ তায়ালা তাকে পানাহার করিয়েছেন। (বোখারী, ১/৩৩৫)
সফরে রোযা রাখা না রাখা উভয়ের অনুমতি আছে।

❑ হাদীস : হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হামযা ইবনে আমরুল আসলামী (রাঃ) অধিক মাত্রায় রোযা রাখতে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী করীম (সঃ) – কে বললেন, হে রাসুল (সঃ)! আমি সফরেও রোযা রেখে থাকি। নবী করীম (সঃ) বললেন, সফর অবস্থায় তুমি ইচ্ছা করলে রোযা নাও রাখতে পার। (বেখারী , ১/৩৩৫)
মৃত ব্যক্তির ফরয রোযার কাজা থাকলে করণীয়।

❑ হাদীস : হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, মৃত ব্যক্তির উপর রোযার কাজা থাকলে অভিভাবক তার পক্ষ থেকে তা আদায় করবে। (বোখারী,১/৩৩৬)
সূর্যাস্তের সাথে সাথে অনতিবিলম্বে ইফতার করা।

❑ হাদীস : সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইশরাদ করেছেন, যতদিন লোকেরা তাড়াতাড়ি (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) ইফতার করবে , ততদিন কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে না। (ছহীহ বোখারী শরীফ,১/ ৩৩৬)
প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোযা রাখা।

❑ হাদীস : হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমার পরম বন্ধু নবী করীম (সঃ) আমাকে তিনটি বিষয়ের অসিয়ত করে গেছেন, (১) আমি যেন প্রতি মাসের (১৩,১৪,১৫,তারিখে) তিনটি রোযা রাখি, (২) চাশতের সময় দু’রাকাত নামায পড়ি, (৩) রাত্রে নিদ্রা যাওয়ার আগেই বেতেরের নামায আদায় করি। (বোখারী, ১/৩৩৭)
জুমআর দিন রোযা রাখা।

❑ হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি নবী করীম (সঃ) -কে বলতে শুনেছি ,তোমাদের কেউ যেন কখনো শুধু জুমআর দিনে রোযা না রাখে। (যদি রাখতে হয়) তবে জুমআর আগের কিংবা পরের দিনও যেন রোযা রাখে। (বোখারী, ১/৩৩৭)
তারাবীহ নামাযের ফযীলত।

❑ হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-বলতে শুনেছি,যে ব্যক্তি রমযানের রাতে ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় তারাবীহর নামাযে দাঁড়ায় (নামায আদায় করে), তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বোখারী, ১/৩৩৮)
লাইলাতুল কদরের ফযীলত।

❑ হাদীস : আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-বলতে শুনেছি,যে ব্যক্তি রমযানের রাতে ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় তারাবীহর নামাযে দাঁড়ায় (নামায আদায় করে), তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বোখারী, ১/৩৩৮)
লাইলাতুল কদরের ফযীলত।

❑ হাদীস : হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) ইশরাদ করেছেন,যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমযানের রোযা রাখে , শবে কদরের রাত্রে দাঁড়ায়, তার আগেকার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বোখারী,১/৩৩৮)

রোজার ঐতিহাসিক তাৎপর্য়।

রোযা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। আদি কাল থেকেই রোযা মানুষের আত্মসুদ্ধির পথ হিসেবে প্রচলন আছে।যেমন মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন-”হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববরতীদের ওপর,যাতে তোমরা তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।” এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,রোযা পূর্ববর্তী যুগেও ফরজ ছিল। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অনুসারে রোযার ইতিকথা নিম্নে তুলে ধরা হলো - * হযরত আদম (আঃ)-এর যুগে রোযা পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম কে রোযা রেখেছিলেন?

এ প্রশ্নের জবাবে হযরত খিযির ইবনে হুবাইশ (রহঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম- আইয়্যামে বীজ কি? উত্তরে তিনি বললেন-আল্লাহ পাকের নিষিদ্ধ ফল খেয়ে হযরত আদম (আঃ) জান্নাত থেকে দুনিয়ায় প্রেরিত হন এবং তাঁর দেহের রং পরিবর্তন হয়ে যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪